Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ছবি
শিরোনাম
ব্যানার
বিস্তারিত
বাংলাদেশে কাঁকরোল একটি জনপ্রিয় সবজি। এটি গ্রীষ্মকালে চাষ করা হয়। এদের স্ত্রী পুরুষ ফুল আলাদা গাছে জন্মে। কাঁকরোল গাছ কন্দমূল উৎপন্ন করে যায় সাহায্যে মূলত বংশবিস্তার করে। কাঁকরোল বাজারে উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়। কাঁচাফল তরকারী, ভাজি বা সিদ্ধ করে ভর্তা হিসেবে খাওয়া যায়। কাঁকরোল প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, লৌহ ক্যারোটিন আছে।

চাষ পদ্ধতি    
দোঁআশ থেকে এটেল দো-আঁশ মাটি কাঁকরোল চাষের জন্য উত্তম। তবে জৈব সার যোগ করে অন্যান্য মাটিতে কাঁকরোল চাষ করা যায়। 

জমি
১) মাঝারি উঁচু ও উচু জমি কাঁকরোল চাষের জন্য উত্তম।
২) সুনিষ্কাশিত ও বন্যানমুক্ত জমিতে কাঁকরোল চাষ করা যায়। 
৩) কাঁকরোল জলাবদ্ধতা মোটেই সহ্য করতে পারে না। 
 
জাত 
কাঁকরোলের বেশ কয়েকটি জাত রয়েছে। যেমন- আসামী, মণিপুরী, মুকন্দপুরী মধুপুরী ইত্যাদি।

জাত পরিচিতি
 
আসামীঃ এ জাতের ফলগুলো সুস্বাদু, গোলাকার ও বেঁটে হয়ে থাকে।
মণিপুরীঃ এ জাতের ফল লম্বাটে ও অপেক্ষাকৃত চিকন, তবে ফলন বেশী দিয়ে থাকে। 

চাষ পদ্ধতি
জমি তৈরী

১) জমি ৪-৫ টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরা করে তৈরী করতে হবে। 
২) জমির উপরিভাগ সমান ও আগাছা দমন করতে হবে। 
৩) এরপর চাষকৃত জমিতে প্রয়োজনীয় মাপের বেড তৈরী করতে হবে। 

বপন সময়ঃ কাঁকরোলের বীজ বপন বা মোথা রোপণের উত্তম সময় মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য জুন মাস।
 
বেড তৈরী
১) দৈর্ঘ্যঃ জমির দৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে। 
২) প্রস্থঃ ৩০০ সে.মি।
৩) দুই বেডের মাঝে নালার প্রস্থ ৩০ সেমি।
৪)  দুই বেডের মাঝে নালার গভীরতা ২০ সেমি।
৫) প্রতি বেডে দুটি সারি থাকবে।
৬) সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ২০০ সেমি।
৭) প্রতি সারিতে ৬০x৬০x৬০ সেমি আকারের গর্ত তৈরী করতে হবে।
৮) মাদা থেকে মাদার দূরত্ব হবে ২৫০ সেমি।
৯) হেক্টরপ্রতি প্রতি মাদার সংখ্যা হবে ২০০০টি।
 
 
             সার প্রয়োগ
সারসারেরপরিমাণ(প্রতিহেক্টরে)  
১। গোবর
২। ইউরিয়া
৩। টিএসপি
৪।এসওপি/এমপি
৫।জিপসাম
৩-৫ টন
১২৫-১৫০ কেজি
১০০-১২৫ কেজি
১০০-১২৫ কেজি
৮০-১০০ কেজি

 
 
সার প্রয়োগ পদ্ধতি
১) গোবর সার জমির তৈরির সময় ছিটিয়ে পানির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। 
২) টিএসপি, এসওপি, জিপসাম চারা লাগানোর ১৫ দিন আগে আকার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
৩) ইউরিয়া সার সমান দুভাগ করে মোথা গজানোর পর যথাক্রমে ১৫ ও ৩০দিন পর উপরিপ্রয়োগ করতে হবে।
৪) এসওপি প্রয়োগ করলে এমপি সার প্রয়োগ করতে হবে না। 
৫) মাটি অধিক অম্লীয় হলে হেক্টরপ্রতি ৮০-১০০ কেজি ডলোচুন শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। 

 
বীজ/মোথা বপন
১) কাঁকরোল চাষের জন্য মোথা রোপণ করতে হবে। ২ মিটার দূরত্বে সারিতে ও ব্যবধানে ৫-৬ সেমি গভীরে মোথ রোপণ করে খড়কুটা দ্ধারা ঢেকে দিতে হবে। 
২) রোপণের জন্য নির্বাচিত মোথার ৫% পুরুষ গাছের মোথা হতে হবে। 
৩) কেননা কাঁকরোলের পুরুষ ও স্ত্রী ফুল আলাদা গাছে জন্মেই পরাগায়ন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে স্ত্রী গাছের পাশাপাশি আনুপাতিক হারে পুরুষ গাছ ধাকা দরকার। 

 
পরিচর্যা 
১) মোথা গজানোর পর আগাছা জন্মালে তা দমন করতে হবে। 
২) নালার সাহায্যে পানির সেচ দিতে হবে। 
৩) অতিরিক্ত পান অপসারণের ব্যবস্থা করতে হবে। 
৪) প্রতিদিন ভোরবেলা স্ত্রী ফুলে কৃত্রিম পরাগায়ন করতে হবে। 
৫) রোগ ও পোকার আক্রমন দেখা দিলে দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে। 
৬) কাঁকরোলের গাছ ১০-১৫ সেমি লম্বা হলে গাছের গোড়ায় ১ টি করে কাঠি পুঁতে দিতে হবে। 
৭) গাছ ৫০ সেমি লম্বা হলে মাচা করে দিতে হবে। 

 
মাটি পরীক্ষা করে সার সুপারিশ
 
  সারসুপারিশ(গ্রাম/গর্ত)  
মাটির
উর্বরতা মান
NPKSZnBজৈব সার/গোবর
(টন/হেঃ)
পরিমিত
মধ্যম
নিম্ন
অতিনিম্ন
০-১৫
১৬-৩০
৩১-৪৫
৪৬-৬০
০-৩
৪-৬
৭-৯
১০-১২
০-১৪
১৫-২৮
২৯-৪২
৪৩-৫৬
০-৬
৭-১২
১৩-১৮
১৯-২৪
 -
০.০-১.৩
১.৪-২.৬
২.৭-৪.০
-
০.০-০.৬
০.৭-১.২
১.৩-২.০
-


 
                                                              উৎসঃ বিএআরসি, ২০০৫
সার প্রয়োগ পদ্ধতি 
১) ইউরিয়া ব্যতিত অন্যান্যা সার বীজ রোপণের ৪৫ দিন পূর্বে গর্তে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার দুই কিস্তিতে চারা গজানোর পর ১৫ দিন ও ৩০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে। 

রোগ দমন
১) কাঁকরোলের যে সকল রোগ দেখা যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- চারার ঢলে পড়া, পাউডারী মিলডিউ, মোজাইক। প্রথম ২টি ছত্রাকজনিত রোগ এবং শেষোক্তটি ভাইরাস জনিত রোগ।

চারার ঢলে পড়া রোগ
১) এ রোগের আক্রমণে কচি গাছের গোড়া পঁচে যায়। 
২) চারা ঢলে পড়ে ও মার যায়।

প্রতিকার 
১) পানি নিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে।
২) রোগমুক্ত মোথা লাগাতে হবে।
৩) আক্রান্ত গাছ তুলে পুড়ে ফেলতে হবে। 
 
পাউডারী মিলডিউ রোগ
১) পাতার উপরে সাদা সাদা ধূসর পাউডারী দেখা যায় এবং
২) পাতা মরে যায়। 

প্রতিকার
১) রোগমুক্ত মোথা রোপণ করতে হবে। 
২) রোগ দেখা দেয়ার সাথে সাথে থায়োভিট বা মাইক্রোথিয়ন বা সালফোটক্স বা অন্যকোন ছত্রাকনাশক সেপ্র করতে হবে। 

ফসল সংগ্রহের সময়
১) মধ্য জুলাই হতে মধ্য সেপ্টেম্বর মাস কাঁকরোল সংগ্রহের উত্তম সময়। 

ফসল সংগ্রহ
১) কাঁকরোল হলদে সবুজ হলে সংগ্রহ করতে হয়। 
২) গাছ রোপণের দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে কাঁকরোল ফুল দিতে আরম্ভ করে।
৩) পরাগায়নের ১২-১৫ দিনের মধ্যে কাঁকরোল সংগ্রহের উপযোগী সময়। 

 
গ্রেডিং, প্যাকেজিং ও বাজারজাতকরণ
১) কাঁকরোল সংগ্রহের পরপরই আকার অনুসারে গ্রেডিং করা হয়। 
২) গ্রেডিংকৃত কাঁকরোল প্যাকিং করে বাজারজাত করা হয়। 
৩) কাঁকরোল বস্তবন্দী না করে বায়ু চলাচলের সুবিধাযুক্ত প্লাস্টিক, কাঠ বা বাঁশের খাঁচা বা হার্ডবোর্ডের বাক্সে করে বাজারে পাঠাতে হয় যাতে গায়ে আঘাত না লাগে।

ফলন
১) জাতভেদে হেক্টরপ্রতি প্রতি ফলন ২০-২৫ টন।
 
করলা বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সবজি। স্বাদে তিক্ত হলেও বাংলাদেশের সকলের নিকট এটি প্রিয় সবজি হিসেবে পরিচিত। ১০০ গ্রাম ভক্ষণ যোগ্য করলায় ১.৫-২.০ ভাগ আমিষ, ২০-২৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১.৮-২.০ মিলিগ্রাম লৌহ এবং ৮৮.৯৬ মিলিগ্রাম খাদ্যপ্রাণ সি আছে। 
 উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় করলা ভাল জন্মে। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে পরাগায়ন বিঘ্নিত হতে পারে। সব রকম মাটিতেই করলার চাষ করা যেতে পারে। জৈব সার সমৃদ্ধ দো-আঁশ বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভাল জন্মে। 
 
জাত
বারি করলা-১
    • জাতটিতে গাঢ় সবুজ রংয়ের ২৫-৩০ টি ফল ধরে (গাছ প্রতি)
    • প্রতি ফলের গড় ওজন ১০০ গ্রাম যা লম্বায় ১৭-২০ সেমি এবং ব্যাস ৪-৫ সেমি।
    • চারা রোপণের ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে প্রথম ফল তোলা যায়।
    • উন্নত পদ্ধতিতে চাষ করলে হেক্টর প্রতি ফলন ২৫-৩০ টন পাওয়া যায়।

গজ করলা
    • জাতটিতে সবজ রংয়ের ১৫-২০ টি ফল ধরে (গাছ প্রতি)
    • প্রতি ফলের গড় ওজন ১৫০-২০০ গ্রাম যা লম্বায় ২৫-৩০ সেমি এবং ব্যাস ৬-৭ সেমি।
    • হেক্টর প্রতি ফলন ২০-২৫ টন(১০০ ১২০ কেজি/শতাংশ) পাওয়া যায়।
 

জীবন কাল  
মোট জীবনকাল প্রায় চার থেকে সারে চার মাস। তবে জাত ও আবহাওয়াভেদে কোন কোন সময় কম বেশী হতে পারে। 

উৎপাদন মৌসুম
ফেব্র্বয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে যে কোন সময় করলার বীজ বোনা যেতে পারে। কেউ কেউ জানুয়ারী মাসেও বীজ বুনে থাকেন কিন্তু এ সময় তাপমাত্রা কম থাকায় গাছ দ্র্বত বাড়তে পারে না, ফলে আগাম ফসল উৎপাদনে তেমন সুবিধা হয় না।